রসায়নে ভালো করার কার্যকরী কৌশল

তুমি কি রসায়নে ভালো করার উপায় জানতে চাও? তাহলে আমার সাজেশনগুলো তোমার দারুণ কাজে আসবে।

রসায়নের ভালো করার উপায়

আসসালামু আলাইকুম, আবার শুরু হয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধ। BUET, Medical, DU A Unit সহ বাংলাদেশের যেকোনো বিজ্ঞান বিভাগের এডমিশন টেস্টে দেখা যায় রসায়ন অনেকের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়ায়। 

যার অন্যতম কারণ হলো এই বিষয়টি নিয়ে অযথা ভয় ও অপরিকল্পিত পদক্ষেপ। আজকে আমি ঠিক সেই বিষয়গুলোসহ অধ্যায়ভিত্তিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবোঃ

রসায়নে ভালো করার অধ্যায়ভিত্তিক প্রস্তুতি

২। ১ম অধ্যায় - ১ম পত্রঃ ল্যাবরেটরির নিরাপদ ব্যবহার

আমরা অনেকেই ভেবে থাকি এর থেকে এমন কি বা আসবে, কিন্তু দেখা যায় এটি হতে প্রায়ই প্রতি বছরই একটা না একটা প্রশ্ন থাকেই। নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো পড়লে সেক্ষেত্রে ভালো হবে –

  • সবগুলো শর্ট ফর্ম যেমনঃ AAS, DSC, NMR, MSDS ইত্যাদির ফুল ফর্ম জেনে রাখা।
  • গ্লাভস ও এর উপাদান সম্পর্কে জানা।
  • কাঁচ বিভিন্ন রকম ও তা পরিষ্কার এবং তা দিয়ে তৈরি ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি নিয়ে জানা।
  • ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে জানা।
  • অ্যানালিটিকাল পদ্ধতি নিয়ে জানা।

১ম অধ্যায় ২য় পত্রঃ পরিবেশ রসায়ন

  • আদর্শ ও বাস্তব গ্যাস নিয়ে জানা
  • দূষণ ও এর কারন নিয়ে জানা
  • এসিড ও ক্ষার তত্ত্ব
  • ভ্যান্ডার ওয়ালস সমীকরণ

৩। ২য় অধ্যায় -  ১ম পত্রঃ গুণগত রসায়ন

  • পরমাণু মডেল ও তার সাথের গুরুত্বপূর্ণ সমীকরণ (তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নির্ণয়, e এর গতিশক্তি বের করা)
  • আয়নিক গুণফল দ্রাব্যতার গুণফল নিয়ে জানা
  • আয়ন শনাক্তকরণ
  • দ্রাবক নিষ্কাশন (নার্নস্ট বন্টন নীতি)

 ২য় অধ্যায় - ২য় পত্রঃ জৈব রসায়ন

জৈব রসায়ন নিয়ে ভয় না পেয়ে, এর পেছনে অনেক সময় ব্যয় না করে খুব বুঝে শুনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক পড়তে হবে। এগুলো হচ্ছে -

  • Naming reaction গুলো যেমনঃ ফিডেল ক্রাফট, মারকনিকভের সূত্র, গ্রিগনারড বিকারক সহ বিক্রিয়া, হফম্যান বিক্রিয়া,ফেলিং দ্রবণ সহ sN1, sN1, E1-E2 এর বিক্রিয়া, ক্যানিজারো বিক্রিয়া, প্রস্তুতকরণ বিক্রিয়াসমূহ।
  • ফেনল, গ্লিসারিন, ডেটল এর প্রস্তুতি
  • কার্যকারী মূলক শনাক্তকরণ বিক্রিয়া
  • নামকরণ, জটিল কম্পাউন্ডের নাম

৪। ৩য় অধ্যায় - ১ম পত্র: মৌলের পর্যায় বৃত্ত ধর্ম

  • P block group - 13, 14, 15,16,17 এর বিশেষ ধর্ম
  • XeF2, XeF4 ও XeF6 এর গঠন ব্যাখ্যা
  • D block এর রঙ্গিন আয়ন বা যৌগ গঠন
  • সংকরায়ন ও যৌগের আকৃতি গঠন
  • হাইড্রজেন বন্ড ও অবস্থান্তর ধাতুর জটিল যৌগের নামকরণ

৩য় অধ্যায় - ২য় পত্র: পরিমাণগত রসায়ন

  • মোলার ধারণা, শতকরা ও ppm এককে রূপান্তর
  • জারণ সংখ্যা নির্ণয় (H2SO4, Na2S2O3, Na2S4O6, CrO5, Fe3SO4, KMnO4, Cl2O,  [Fe(CN)6]3-, [Cr(CN)6]3-, [Cu(NH3)4]2+ ..etc
  • জারণ- বিজারণ অর্ধ বিক্রিয়া (জারক হিসেবে KMnO4 , K2Cr2O7, FeCl3, CuSO4, Cl2/Br2/I2, H2O2 এবং বিজারক হিসেবে H2C2O4, FeSO4, SnCl2, KI, SO2, H2S, Na2S2O3,H2O2 সম্পন্ন যৌগ থাকবে )
  • দ্রবণের ঘনমাত্রা নির্ণয়ে বিয়ার ল্যাম্বারট সূত্র
  • পারমাণবিক শোষণ বর্ণালী, UV-Vis, Bonding MO

৫। ৪র্থ অধ্যায় – ১ম পত্রঃ রাসায়নিক পরিবর্তন

  • এটম ইকোনমি, গ্রিনার পদ্ধতি নিয়ে অঙ্কগুলো জানা
  • আরহেনিয়াস সমীকরণ এর প্রয়োগ – ভিন্ন রূপে তার গ্রাফের ঢাল নির্ণয়
  • প্রভাবক ও তার প্রকারভেদ, কলাকৌশল
  • ভরক্রিয়ার সূত্র, Kp ও Kc নির্ণয়
  • পানির আয়নিকরণ ও এসিড এবং ক্ষার এর বিয়োজন ধ্রুবক নির্ণয়
  • বাফার দ্রবণ ও রক্তের নির্ণয়
  • প্রমাণ গঠন এনথালপি নির্ণয়
  • ল্যাভয়সিয়ে ও হেসের সূত্র নির্ণয় ও প্রয়োগ     

২য় পত্রঃ তড়িৎ রসায়ন

  • কোষের পরিবাহিতা নির্ণয়
  • ফ্যারাডের ১ম  সূত্র ও তা প্রয়োগে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের পরিমাপ
  • কোষের emf নির্ণয়
  • গিবস মুক্ত শক্তি বের করা
  • নার্নস্ট এর সমীকরণ
  • বিভিন্ন ধরনের কোষ ও তার ক্রিয়া কৌশল

৬। ৫ম অধ্যায় -১ম পত্রঃ কর্মমুখী রসায়ন

  • অনুমোদিত রাসায়নিক প্রিজারভেটিভস এর কার্যকারিতা জানা
  • অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, কিলেটিং এজেন্ট, পিকলিং সম্পর্কে জানা
  • সাসপেনশন, কোয়াগুলেশন, ব্রাউনীয় গতি নিয়ে জানা
  • দুধের শতকরা সংযুক্তি, মাখন, ঘি উৎপাদন
  • গ্লাস ক্লিনার, টয়লেট ক্লিনার, ভিনেগার প্রস্তুতি

২য় পত্রঃ অর্থনৈতিক রসায়ন

  • গ্যাস ও কয়লা ক্ষেত্রগুলোর নাম, ফুল ফর্ম (MCF, TCF, BBL, BCF, BAPEX, BTU, LPG, BCIC, CUFL etc etc)
  • বিভিন্ন যৌগ যেমনঃ জিপ্সাম, ক্লিংকার, ক্যাল্কেরিয়াস, টেল্ক, কুকিং লিকার, পটাশ গ্লাস, সেরিয়াম গ্লাস, লেড গ্লাস ইত্যাদির নামসহ ফরমুলা জেনে রাখা।
  • সিরামিক সামগ্রীর প্রবাহচিত্র, মুলাইট  ও ক্রিস্টবেলাইটের গঠন
  • প্রাকৃতিক গ্যাস হতে ইউরিয়া বানানোর মূলনীতি

রসায়নে ভালো করার সহজ উপায়

১। একসাথে অনেক কিছু না পড়ে, অল্প অল্প করে কিছু অংশ পড়ে শেষ করা।

২। প্রতিদিন আগের পড়া টপিকগুলো রিভিশন দেওয়া।

৩। নোট বেশি বড় করা যাবে না; প্রয়োজনীয় তথ্য সংক্ষেপে লিখো।

৪। উপোরোক্ত টপিকগুলো হতে নিজের সাধ্যমত পড়তে হবে, তবে যতটুকু পড়বে যেন তা মনে থাকে।

৫। ভর্তি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার সময় কমন প্রশ্নগুলো আগে উত্তর করবে।


Written by:

Farhana Farina Admission Expert

IBA, Jahangirnagar University

এই পোস্টটি শেয়ার করুন
আজকের সেরা খবর গতকালের সেরা খবর
2 জন মতামত দিয়েছেন
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
comment url
  • Safayet
    Safayet ৩১ মার্চ

    Onek sundor suggestion apu.

    • Slice of Life
      Slice of Life ১৪ মে

      Thank you so much